
৳ ৬৪০ ৳ ৪৮০
|
২৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
একাডেমিক বইয়ে ১০% পর্যন্ত ছাড়





আশ্চর্যময়ী, তোমাকে/ কিছু অংশ...
মনোরমা কনফেকশনারি’র সামনে এসে দাঁড়াল শাহেদ। দেখল সবসময়ের মতো দোকানের বাইরে চেয়ার পেতে বসে আছে বাদল দাস। হাতে মোটাসোটা একটা বই। শাহেদকে দেখে বইটা গুটিয়ে রাখল।
‘এই একটা চেয়ার এনে দে,’ বলে হাঁক দিল বাদল দাস। দোকানে শুকনো, লিকলিকে একটা ছেলে কর্মচারি বসে। ওর নাম এখনও জানে না শাহেদ। ছেলেটার বয়স সতেরো-আঠারো হবে। ঠোঁটের উপর গোঁফের ছাপ স্পষ্টতর হচ্ছে। ছেলেটা একটা চেয়ার এনে রাখল বাদল দাসের পাশে।
‘বসো,’ বাদল দাস বলল। ‘ওকে একটা কেক দে।’
শাহেদ বসল। কোলের উপর স্কুলব্যাগটা রাখল।
ছেলেটা কাঁচের প্লেটে করে একটা কেক এনে দিল। কালো কুচকুচে একটা জিনিস। খিদে পেয়েছিল। আজকে টিফিন ব্রেকে কিছু খায়নি। কেকে কামড় দিয়েই বুঝল জিনিসটা দেখতে কালো হলেও বেশ মজাদার।
‘শাহেদ,’ বাদল দাস বলল, ‘আমার হাত দুটো দেখেছো?’ বলে নিজের হাত দুটো শাহেদের সামনে বাড়িয়ে দিল।
হাত দুটো দেখল শাহেদ। একজন পুরুষ মানুষের হাত যেমন হয়, তেমনই হাত। লোমশ, শুষ্ক।
‘এই হাত দিয়ে আমার অনেক কিছু করার কথা ছিল, বুঝলে?’
শাহেদ কিছু না বুঝেই মাথা নাড়াল।
‘ধরো আমি আর্টিস্ট হতে পারতাম, আমি খুব ভালো আঁকি,’ বাদল দাস বলল। ‘পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু বেশিদিন চালাতে পারিনি।’
শাহেদ কিছু বলল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটা তার পরিচিত। চারুকলা কী জিনিস সেটা এখনও জানে না। সেখানে কী হয় তাও জানে না।
‘তারপর ভাবলাম, ভাস্কর্য বানাই। ভাস্কর্য চেন তো? মূর্তি,’ বাদল দাস বলল।
শাহেদ মাথা নাড়াল। মূর্তি সে চেনে। প্রতি দূর্গাপুজা আর কালীপূজায় দেখে। এরমধ্যে কিছু মূর্তিকে দেখে সে ভয়ও পায়। যেমন মহিশাসুর-এর মূর্তি।
‘ভাস্কর্য বানাতে গিয়েও পারিনি। মূর্তি হয় কিন্তু সেখানে কোনো প্রাণ থাকে না। আমার ইচ্ছে ছিল মিকেলের মতো একটা ভাস্কর্য বানাবো। যুগ যুগ টিকে থাকবে। মিকেলকে চেনো তো?’
শাহেদ মিকেল’কে চেনে না। এরকম অদ্ভুত নাম সে জীবনেও শোনেনি।
‘চিনবে। এরপর আমি লিখতে বসলাম। গদ্য, পদ্য, প্রবন্ধ, এইসব। কিন্তু সেখানেও ভালো কিছু হলো না,’ বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল বাদল দাস, ‘এরপর থেকে আমি শুধু দেখি আর পড়ি।’
‘আচ্ছা।’
‘এই আঁকাটা তোমার?’
ছোট একটা কাগজের টুকরো বাড়িয়ে দিল বাদল দাস। কাগজটা শাহেদের চেনা। ময়লা একটা কাগজ। এরকম আরও অনেক কাগজের টুকরো তার স্কুলব্যাগের ভেতরে আছে। সেগুলোতে নানা রকম আঁকাজোকায় ভর্তি। এই কাগজটা বাদল দাসের হাতে কিভাবে গেল, অবাক হলো।
‘হ্যাঁ। আপনি কি করে পেলেন?’
‘সেদিন তুমি যাচ্ছিলে, তোমার ব্যাগের এক ফাঁক দিয়ে পড়ে গিয়েছিল।’
‘হতে পারে,’ শাহেদ বলল।
কাগজটা হাতে নিয়েছে। ক্লাসে পেছনের বেঞ্চে বসে মাঝে মাঝেই কাগজে পেন্সিলে আঁকাজোকা করে। এটাও তেমন একটা জিনিস। এখানে একটা মেয়ের মুখ আঁকা। লাবনীর মুখ। তবে সেটা মুখের একপাশটা। যেটুকু পেছন থেকে দিকে সামান্য দেখা যায়।
ছোট একটা মেয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে, হাতে একটা কলম ধরা। ছবিতে বিশেষত্ব কিছু নেই। পেন্সিলে যতটুকু আঁকা যায়।
‘আমি চাই তুমি আঁকাআঁকি করো,’ বাদল দাস বলল, ‘কারো কাছে কিছু শেখার দরকার নেই। শিখতে গেলে তোমার আঁকার হাত নষ্ট হয়ে যাবে।’
Title | : | আশ্চর্যময়ী, তোমাকে |
Author | : | শরীফুল হাসান |
Publisher | : | অন্যধারা |
Edition | : | 1st Published, 2025 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
শরীফুল হাসানের জন্ম ময়মনসিংহ শহরে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। থৃলার সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ থেকে লেখালেখির জগতে পদার্পন। অনুবাদ দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তিতে লিখেছেন সাম্ভালা টৃলোজি (সাম্ভালা, সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা, সাম্ভালা শেষ যাত্রা), ঋভু, আঁধারের যাত্রী এবং কালি ও কলম ২০১৬ শিশু ও কিশোর সাহিত্যে পুরষ্কারপ্রাপ্ত অদ্ভূতুড়ে বইঘর। এছাড়া বেশ কিছু গল্পসঙ্কলনে প্রকাশিত হয়েছে তার একাধিক ছোটগল্প। বর্তমানে তিনি ঢাকায় বসবাস করছেন।
If you found any incorrect information please report us